আখমাদ কাদিরভ
আখমাদ কাদিরভ | |
---|---|
Ахмат Кадыров Къадири Ахьмад | |
১ম চেচেন প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ৫ অক্টোবর ২০০৩ – ৯ মে ২০০৪ | |
পূর্বসূরী | পদ প্রতিষ্ঠিত |
উত্তরসূরী | সের্গেই আব্রামভ (ভারপ্রাপ্ত) আলু আলখানভ |
চেচেন প্রজাতন্ত্র প্রশাসনের প্রধান অস্থায়ী পদ, অস্থায়ী সরকার প্রধান | |
কাজের মেয়াদ ১২ জুন ২০০০[১] – ৪ অক্টোবর ২০০৩ | |
পূর্বসূরী | পদ প্রতিষ্ঠিত |
উত্তরসূরী | পদ বিলুপ্ত নিজেই (রাষ্ট্রপতি হিসেবে) |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | কাজাকিস্তান, (প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন) | ২৩ আগস্ট ১৯৫১
মৃত্যু | ৯ মে ২০০৪ গ্রোজনি, চেচনিয়া, রাশিয়া | (বয়স ৫২)
মৃত্যুর কারণ | হত্যাকাণ্ড |
সমাধিস্থল | আখমাত-ইউর্ত |
জাতীয়তা | রুশ |
দাম্পত্য সঙ্গী | আয়মান নাসিয়েভনা কাদিরভা |
সন্তান | ৪ জন (রমজান কাদিরভসহ) |
পিতামাতা | আব্দুলখামিদ কাদিরভ (পিতা) দিকা কাদিরভা (মাতা) |
জীবিকা | ওলামা |
পুরস্কার | হিরো অফ রাশিয়া |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য |
|
শাখা | রুশ সশস্ত্র বাহিনী |
কাজের মেয়াদ | ২০০৩-২০০৪ |
যুদ্ধ |
আখমাদ-খাদজি আব্দুলখামিদোভিচ কাদিরভ[ক] (২৩ আগস্ট ১৯৫১ – ৯ মে ২০০৪) একজন চেচেন বংশোদ্ভূত একজন রুশ রাজনীতিবিদ ও বিপ্লবী ছিলেন, যিনি প্রথম চেচেন যুদ্ধের সময় এবং পরে ১৯৯০ এর দশকে চেচেন প্রজাতন্ত্রের প্রধান মুফতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে তিনি রুশ সরকারকে সহায়তা প্রদান করেন এবং পরে ২০০৩ সালের ৫ অক্টোবর চেচেন প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হন। তিনি চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রমজান কাদিরভের পিতা।
২০০৪ সালের মে মাসে তিনি চেচেন ইসলামপন্থীদের দ্বারা সংঘটিত একটি বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। তখন তিনি রাজধানী গ্রোজনিতে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত একটি কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছিলেন। তার ছেলে রমজান কাদিরভ ২০০৭ সালে চেচেন প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হিসাবে তার স্থলাভিষিক্ত হন।
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]আখমাদ কাদিরভ তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের কারাগান্ডায় ১৯৫১ সালের ২৩ আগস্ট একটি চেচেন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারটি চেচেন ও ইঙ্গুশদের নির্বাসনের সময় চেচনিয়া থেকে বহিষ্কৃত হয়ে বর্তমান কাজাকিস্তানে চলে আসেন। ১৯৫৭ সালে তার পরিবার চেচনিয়ার শালিনস্কি জেলায় ফিরে যান। ১৯৮০ সালে তিনি বুখারার মির-ই আরব মাদ্রাসায় ইসলাম অধ্যয়ন শুরু করেন। তারপর ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত উজবেক সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের তাসখন্দের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে তিনি চেচনিয়ায় ফিরে আসেন এবং কুর্চালোয় গ্রামে একটি ইসলামিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রথম চেচেন যুদ্ধ
[সম্পাদনা]চেচনিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণার পর তিনি প্রেসিডেন্ট জওহার দুদায়েভের সমর্থক হয়ে ওঠেন। তখন তিনি মিলিশিয়া কমান্ডার হিসেবে চেচেন পক্ষের হয়ে প্রথম চেচেন যুদ্ধে উল্লেখযোগ্যভাবে লড়াই করেন।[২] ১৯৯৫ সালে তিনি চেচেন প্রজাতন্ত্রের প্রধান মুফতি নিযুক্ত হন। মস্কো ও চেচেন স্বাধীনতাকামীদের মধ্যে লড়াই শুরু হওয়ার পর কাদিরভ ঘোষণা করেন যে, বর্তমান এক মিলিয়ন চেচেন ও ১৫০ মিলিয়ন রুশ রয়েছে। যুদ্ধে প্রতিটি চেচেন যদি ১৫০ জন রুশকে হত্যা করে তাহলে আমরা জিতব।[৩]
দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ
[সম্পাদনা]প্রথম যুদ্ধে চেচেনরা মূলত চেচেন জাতীয়তাবাদের জন্য লড়েছিল। তখন চেচেন বাহিনীর বেশিরভাগই ছিল জিহাদি মনোভাবের যোদ্ধা। সে সময়ে কাদিরভ প্রধান মুফতি হিসাবে ওয়াহাবিবাদের সমালোচনা করেন। ১৯৯৯ সালের শুরুর দিকে কাদিরভ সশস্ত্র মিলিশিয়াদের সামনে একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন যে, জাতি তাদের পিছনে রয়েছে এবং তাদের অধ্যবসায় ও বিশ্বাসের সাথে লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত।[৪]
কিন্তু ১৯৯৯ সালের শরতে তিনি বিদ্রোহ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে তার সমর্থনের প্রস্তাব দেন।[৫] আসলান মাসখাদভ অবিলম্বে তাকে প্রধান মুফতি চেয়ার থেকে বরখাস্ত করেন। জেমস হিউজের মতে কাদিরভের পিছুটান আংশিকভাবে ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে এবং আংশিকভাবে চেচেন জনসংখ্যার মানবেতর অবস্থা বিবেচনা করার কারণ থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারে। এছাড়া বিদ্রোহের উপর ক্রমবর্ধমান ওয়াহাবি প্রভাবের ভয়েও তিনি এমন কাজ করতে পারেন।[৬]
২০০০ সালের জুনে রুশ বাহিনী চেচনিয়ার নিয়ন্ত্রণ দখল করার পর কাদিরভকে রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন চেচেন প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনের প্রধান নিযুক্ত করেন। এটি সংবিধান প্রয়োগ না হওয়া পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারী অফিস ছিল।[৭] এরপর ২০০৩ সালের ৫ অক্টোবর তিনি চেচেন প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। এই অবস্থানে তিনি প্রধানত মস্কোপন্থী ছিলেন এবং তিনি প্রাক্তন বিদ্রোহী যোদ্ধাদের জন্য সাধারণ ক্ষমারও ঘোষণা দেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, যারা আত্মসমর্পণ করবে তারা চেচেন পুলিশ ও তার অনুগত মিলিশিয়া বাহিনীতে যোগদানের অনুমতি পাবে। তার প্রধান ব্যক্তিগত দেহরক্ষী ছিলেন মভলাদি বাইসারভ। জানা যায় যে, মৃত্যুর আগে তার বিরুদ্ধে অন্তত এক ডজন হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছিল।
মৃত্যু ও উত্তরাধিকার
[সম্পাদনা]২০০৪ সালের ৯ মে রাজধানী শহর গ্রোজনিতে মধ্য-সকালে সোভিয়েত বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ চলাকালীন দিনামো ফুটবল স্টেডিয়ামের ভিআইপি আসনের মধ্যে একটি বিস্ফোরণ ঘটে এবং এর ফলে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি নিহত হন।[৮] তখন তার দুই দেহরক্ষী, চেচেন স্টেট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, রয়টার্সের একজন সাংবাদিকসহ আরো এক ডজন মানুষ নিহত হয়।[৯] চেচনিয়ায় রুশ বাহিনীর কমান্ডার কর্নেল জেনারেল ভ্যালেরি বারানভসহ আরো ৫৬ জন আহত হন এবং তিনি বিস্ফোরণে একটি পা হারান। চেচেন বিদ্রোহী নেতা শামিল বাসায়েভ পরে বলেন যে, তিনি এই হামলার জন্য $৫০,০০০ প্রদান করেছিলেন।[১০]
আখমাদ কাদিরভের মোট সন্তান চার জন। দুই মেয়ে (জারগান ও জুলে) এবং দুই ছেলে। তার বড় ছেলে জেলিমখান কাদিরভ, তিনি ২০০৪ সালে মারা যান।[১১] ছোট ছেলে রমজান কাদিরভ তার পিতার মিলিশিয়ার নেতৃত্ব দেন এবং ২০০৭ সালের মার্চ মাসে চেচনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। গ্রোজনির আখমাদ কাদিরভ মসজিদ ও ইসরায়েলের আবু ঘোষ গ্রামের আখমাদ হাজি কাদিরভ মসজিদ দুটিই তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে।[১২] ২০১৭ সালের ৭ জুন ফুটবল ক্লাব তেরেক গ্রোজনির নাম কাদিরভের সম্মানে আখমত গ্রোজনি রাখা হয়।[১৩]
টীকা
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Russia appoints Chechen leader, BBC News, 12 June 2000
- ↑ Bowker, Mike (২০০৫)। "Western Views of the Chechen Conflict"। Chechnya: From Past to Future (1st সংস্করণ)। Anthem Press। পৃষ্ঠা 223–38। আইএসবিএন 978-1-84331-164-5।
- ↑ The High Cost of Job Security ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ আগস্ট ২০০৬ তারিখে, The Moscow Times, 8 September 2006
- ↑ Ahmad Kadyrov 1999 speech (with English translation, posted by Islamists, YouTube)
- ↑ A Woman Behind the Lines of the War in Chechnya Anne Nivat, PublicAffairs publishers, 2001 আইএসবিএন ১৫৮৬৪৮০৪৪৮ (Google Books)
- ↑ Hughes, James (২০০৫)। "The Peace Process in Chechnya"। Chechnya: From Past to Future (1st সংস্করণ)। Anthem Press। পৃষ্ঠা 265–288। আইএসবিএন 978-1-84331-164-5।
- ↑ Russia appoints Chechen leader, BBC News, 12 June 2000
- ↑ Myers, Steven Lee (২০০৪-০৫-০৯)। "Chechen President Is Killed in Bombing at Holiday Celebration"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৮।
- ↑ Bodyguards foil assassination of Chechen leader: report ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ আগস্ট ২০০৮ তারিখে, AFP, 29 July 2008
- ↑ "$50,000 Bounty in Chechen Blood Feud"। The New York Times। ১৭ জুন ২০০৬।
- ↑ Eldest Son Of Akhmad Kadyrov Dies, The Jamestown Foundation, 2 June 2004
- ↑ The New Mosque of Abu Ghosh: 23 March 2014 Inauguration ceremony
- ↑ Главная футбольная команда Чеченской Республики будет переименована в «АХМАТ» (রুশ ভাষায়)। FC Akhmat Grozny। ৭ জুন ২০১৭। ৭ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০২২।